০২:১৪ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১০ অক্টোবর ২০২৫, ২৪ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

কমলনগরে বখাটে ছেলে -ছাত্রীকে প্রেমের ফাঁদে ধর্ষণ

কমলনগরে বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণ, মাদ্রাসাছাত্রী চার মাসের অন্তঃসত্তা,প্রেমিকের অস্বীকার
(কমলনগর- লক্ষ্মীপুর):লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলে নবম শ্রেণিতে পড়ুয়া এক মাদ্রাসা ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে প্রতিবেশী এক যুবকের বিরুদ্ধে। ডাক্তারি পরীক্ষার রিপোর্ট অনুযায়ী ওই মাদ্রাসা ছাত্রী চার মাসের অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার প্রমাণ পাওয়া গেছে। এদিকে ছাত্রীটিকে বিয়ে করতে অস্বীকার করে গ্রাম ছেড়ে গা-ঢাকা দিয়েছে প্রতারক ওই প্রেমিক। এঘটনায় ভুক্তভোগী লোকলজ্জার ভয়ে পরিবারের অগোচরে একাধিকবার আত্মহত্যার চেষ্টা করেন বলেও জানা গেছে। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
উপজেলার ৮নং চর কাদিরা ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ড বাদামতলী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত প্রেমিক মো. তানজিদ (১৮) ওই এলাকার সানু মাঝির ছেলে। সে পেশায় একজন জেলে।
ভুক্তভোগী ছাত্রীর অভিযোগ, মাদ্রাসায় আসা যাওয়ার পথে একই গ্রামের সানু মাঝির ছেলে তানজিদ তাকে দীর্ঘদিন ধরে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে আসছিল। একপর্যায়ে চলতি বছরের শুরুর দিকে তানজিদের সঙ্গে তার প্রেমের সর্ম্পক গড়ে ওঠে। চার মাস আগে তানজিদ গোপনে ছাত্রীর বাড়িতে এসে শোবার ঘরে ঢুকে পড়ে। এসময় তার ইচ্ছের বিরুদ্ধে তাকে ধর্ষণ করে তানজিদ। কিছুদিন পর তানজিদ তাকে বিয়ে করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে গৃহত্যাগ করে। এরপর বিয়ে না করে ফুসলিয়ে আবারও তার সাথে একাধিকবার শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হয় তানজিদ।
একসপ্তাহ আগে হঠাৎ করে বমি ও পেট ব্যথা শুরু হলে মায়ের সাথে স্থানীয় একটি বেসরকারি ক্লিনিকে চিকিৎসা নিতে গেলে অন্তঃসত্ত্বার বিষয়টি ধরা পড়ে।
পরবর্তীতে পরিবারের চাপের মুখে তানজিদের সাথে শারীরিক সম্পর্কে জড়ানোর বিষয়টি খুলে বলে ছাত্রীটি। পরে অন্ত:সত্তার বিষয়টি প্রেমিক তানজিদকে জানানো হলে সে বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতি দেখায়। এক পর্যায়ে বিয়ে করতে অস্বীকার করে এলাকা থেকে পালিয়ে যায়।
ছাত্রীটি আরও জানান, তানজিদ ফাঁদে ফেলে আমার সর্বনাশ করেছে। আমার পেটে তার চার মাসের সন্তান। এখন সে আমাকে বিয়ে না করলে অনাগত সন্তান কার পরিচয়ে পৃথিবীতে আসবে। এসময় কান্নায় ভেঙে পড়ে বলেন, তানজিদ আমাকে বিয়ে না করলে মরণ ছাড়া আমার আর কোনো পথ নেই।
ভুক্তভোগী ছাত্রীর বাবা জানান, মেয়ে অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার বিষয়টি জানার পর অভিযুক্ত তানজিদের বাবা শানু মাঝি, মামা নাছির মাঝির কাছে ছুটে যান তিনি । পরে একদিনের সময় নিয়ে নাছির মাঝি তানজিদকে গোপনে এলাকা থেকে সরিয়ে অন্যত্র কোথাও পাঠিয়ে দেন। এরপর থেকে অভিযুক্ত তানজিদ এলাকায় নেই জানিয়ে নানা টালবাহানা করেন তারা। তানজিদ এলাকায় আসবে জানিয়ে তার মামা নাছির মাঝি বিয়ের আয়োজন করার নামে বিষয়টি কাউকে জানাতে বারণ করায় তিনি ঘটনাটি এতোদিন গোপণ রেখেছেন। এখন নিরুপায় হয়ে প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।

সরেজমিন গেলে নাম প্রকাশ না করার অনুরোধে স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি জানান, ছাত্রীটি অন্ত:সত্বার ঘটনায় শানু মাঝির ছেলে তানজিদ শতভাগ জড়িত। অন্ত:স্বত্তাকে ছেলের বউ করতে শানু মাঝি রাজি থাকলেও ছেলের মামা নাছির মাঝির নিল নকশার কারণে বিয়েটা হচ্ছেনা। নাছির মাঝি তার ভাগিনাকে গোপনে সরিয়ে দিয়েছেন বলেও জানান তারা।
তবে ভাগিনাকে সরিয়ে দেয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেন নাছির মাঝি।
অভিযুক্ত তানজিদের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করলেও তিনি রিসিভ না করায় বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
কমলনগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তহিদুল ইসলাম জানান, এবিষয়ে এরআগে কেউ তাকে জানায়নি। ভুক্তভোগীর অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ট্যাগ:

আপনার মন্তব্য লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষণ করুন

লেখক তথ্য সম্পর্কে

কমলনগরে বখাটে ছেলে -ছাত্রীকে প্রেমের ফাঁদে ধর্ষণ

আপডেটের সময় : ১০:০২:০৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ জুন ২০২৫

কমলনগরে বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণ, মাদ্রাসাছাত্রী চার মাসের অন্তঃসত্তা,প্রেমিকের অস্বীকার
(কমলনগর- লক্ষ্মীপুর):লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলে নবম শ্রেণিতে পড়ুয়া এক মাদ্রাসা ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে প্রতিবেশী এক যুবকের বিরুদ্ধে। ডাক্তারি পরীক্ষার রিপোর্ট অনুযায়ী ওই মাদ্রাসা ছাত্রী চার মাসের অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার প্রমাণ পাওয়া গেছে। এদিকে ছাত্রীটিকে বিয়ে করতে অস্বীকার করে গ্রাম ছেড়ে গা-ঢাকা দিয়েছে প্রতারক ওই প্রেমিক। এঘটনায় ভুক্তভোগী লোকলজ্জার ভয়ে পরিবারের অগোচরে একাধিকবার আত্মহত্যার চেষ্টা করেন বলেও জানা গেছে। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
উপজেলার ৮নং চর কাদিরা ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ড বাদামতলী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত প্রেমিক মো. তানজিদ (১৮) ওই এলাকার সানু মাঝির ছেলে। সে পেশায় একজন জেলে।
ভুক্তভোগী ছাত্রীর অভিযোগ, মাদ্রাসায় আসা যাওয়ার পথে একই গ্রামের সানু মাঝির ছেলে তানজিদ তাকে দীর্ঘদিন ধরে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে আসছিল। একপর্যায়ে চলতি বছরের শুরুর দিকে তানজিদের সঙ্গে তার প্রেমের সর্ম্পক গড়ে ওঠে। চার মাস আগে তানজিদ গোপনে ছাত্রীর বাড়িতে এসে শোবার ঘরে ঢুকে পড়ে। এসময় তার ইচ্ছের বিরুদ্ধে তাকে ধর্ষণ করে তানজিদ। কিছুদিন পর তানজিদ তাকে বিয়ে করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে গৃহত্যাগ করে। এরপর বিয়ে না করে ফুসলিয়ে আবারও তার সাথে একাধিকবার শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হয় তানজিদ।
একসপ্তাহ আগে হঠাৎ করে বমি ও পেট ব্যথা শুরু হলে মায়ের সাথে স্থানীয় একটি বেসরকারি ক্লিনিকে চিকিৎসা নিতে গেলে অন্তঃসত্ত্বার বিষয়টি ধরা পড়ে।
পরবর্তীতে পরিবারের চাপের মুখে তানজিদের সাথে শারীরিক সম্পর্কে জড়ানোর বিষয়টি খুলে বলে ছাত্রীটি। পরে অন্ত:সত্তার বিষয়টি প্রেমিক তানজিদকে জানানো হলে সে বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতি দেখায়। এক পর্যায়ে বিয়ে করতে অস্বীকার করে এলাকা থেকে পালিয়ে যায়।
ছাত্রীটি আরও জানান, তানজিদ ফাঁদে ফেলে আমার সর্বনাশ করেছে। আমার পেটে তার চার মাসের সন্তান। এখন সে আমাকে বিয়ে না করলে অনাগত সন্তান কার পরিচয়ে পৃথিবীতে আসবে। এসময় কান্নায় ভেঙে পড়ে বলেন, তানজিদ আমাকে বিয়ে না করলে মরণ ছাড়া আমার আর কোনো পথ নেই।
ভুক্তভোগী ছাত্রীর বাবা জানান, মেয়ে অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার বিষয়টি জানার পর অভিযুক্ত তানজিদের বাবা শানু মাঝি, মামা নাছির মাঝির কাছে ছুটে যান তিনি । পরে একদিনের সময় নিয়ে নাছির মাঝি তানজিদকে গোপনে এলাকা থেকে সরিয়ে অন্যত্র কোথাও পাঠিয়ে দেন। এরপর থেকে অভিযুক্ত তানজিদ এলাকায় নেই জানিয়ে নানা টালবাহানা করেন তারা। তানজিদ এলাকায় আসবে জানিয়ে তার মামা নাছির মাঝি বিয়ের আয়োজন করার নামে বিষয়টি কাউকে জানাতে বারণ করায় তিনি ঘটনাটি এতোদিন গোপণ রেখেছেন। এখন নিরুপায় হয়ে প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।

সরেজমিন গেলে নাম প্রকাশ না করার অনুরোধে স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি জানান, ছাত্রীটি অন্ত:সত্বার ঘটনায় শানু মাঝির ছেলে তানজিদ শতভাগ জড়িত। অন্ত:স্বত্তাকে ছেলের বউ করতে শানু মাঝি রাজি থাকলেও ছেলের মামা নাছির মাঝির নিল নকশার কারণে বিয়েটা হচ্ছেনা। নাছির মাঝি তার ভাগিনাকে গোপনে সরিয়ে দিয়েছেন বলেও জানান তারা।
তবে ভাগিনাকে সরিয়ে দেয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেন নাছির মাঝি।
অভিযুক্ত তানজিদের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করলেও তিনি রিসিভ না করায় বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
কমলনগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তহিদুল ইসলাম জানান, এবিষয়ে এরআগে কেউ তাকে জানায়নি। ভুক্তভোগীর অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।