০১:০৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৯ অক্টোবর ২০২৫, ২৪ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

৫ লাখের অধিক এমপিও ভূক্ত শিক্ষক -কর্মচারী চরম বৈষম্যের শিকার!

আজিজুর রহমান আযম,সিনিয়র সাংবাদিক ও কলামিস্ট:
বাংলাদেশের প্রায় পাঁচ লাখের উপর অধিক এমপিও ভূক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা স্বাধীনতার পর থেকে এই পর্যন্ত রাষ্ট্রের চরম বৈষম্যের শিকার।
তাদের দ্বারা দেশের শিক্ষাব্যবস্থার প্রায় ৯৮% শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিচালিত হয়ে আসছে। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখ ও পরিতাপের বিষয় তাদেরকে অধ্যক্ষ/প্রধান শিক্ষক/সুপার থেকে পিয়ন পর্যন্ত মাত্র ১ হাজার টাকা বাড়ি ভাড়া দেওয়া হয়।এই সামান্য টাকা দিয়ে বাড়ি ভাড়া তো দূরের কথা বাড়ির বারান্দা ভাড়াও পাওয়া সম্ভব নয়।তারা উৎসব ভাতা পান মূল বেতনের মাত্র ২৫% টাকা।তাও এটা চার দলীয় জোট বিএনপি সরকারের সময় এটা দেওয়া হয়েছে।অত্যন্ত দুঃখের বিষয় আওয়ামী লীগ এর মতো প্রাচীন একটি দল দীর্ঘদিন ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত,কিন্তু তারা শিক্ষকদের উৎসব ভাতা একটি পয়সাও বাড়ায়নি।এটা শিক্ষকদের জন্য বিরাট ট্র্যজেডি!এর উপর মরার উপর খাড়ার ঘা এর মতো আরেকটি মর্মান্তিক ঘটনা, অদূরদর্শী এক কারিগরি কলেজের অধ্যক্ষ শাহজান আলম সাজুর প্ররোচনায় ২০১৭ সাল থেকে শিক্ষকদের বেতন থেকে অতিরিক্ত ৪% কর্তন শুরু করেছে,কিন্তু একজন শিক্ষক শিক্ষিকা তার চাকরির অবসরের পর এই ৪% এর কোনো ন্যায্য
হিস্যা পায়না উল্লেখ্য চারদলীয় জোট সরকারের সময় সেলিম ভূইয়া ও বর্তমান সরকারের সময় শাহজাহান আলম সাজুর নিকট শিক্ষকরা জিম্মি।অসহায় শিক্ষকদের টাকা নয়ছয় করার জন্য তাদের উপর আল্লাহর গজব পড়ুক।
কিন্তু আশার ব্যাপার শিক্ষকরা দীর্ঘদিন মামলা মৌকদ্দমা করে শেষ পর্যন্ত মহামান্য হাইকোর্ট এর রায়ে তাদের অতিরিক্ত ৪% কর্তন সহ মোট ১০% কর্তনের ন্যায্য হিস্যা চাকরির অবসরের ৬মাসের মধ্যে প্রদান করার জন্য শিক্ষা মন্ত্রনালয়কে নির্দেশ দেন।আশা করি বর্তমান সরকার শিক্ষকদের ন্যায্য ও ন্যায় সঙ্গত দাবীর প্রতি সম্মান রেখে আপিল করবেন না।যদি এই রায়ের বিরুদ্ধে সরকার আপিল করে তাহলে শিক্ষকরা মানসিক ভাবে ভেঙে পড়বে এবং এর বিরুদ্ধ তীব্র আন্দোলন গড়ে তুলবে।

শিক্ষকরা মানুষ গড়ার কারিগর। তারা জাতির নির্মাতা।স্মার্ট বাংলাদেশ গঠন করতে হলে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা,মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী, মাননীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী,শিক্ষা সচিব ও মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অদিদপ্তরের ডিজি মহোদয়কে একজন অভিভাবক ও কলাম লেখক হিসেবে অনুরোধ জানাই শিক্ষকদের যৌক্তিক দাবি সমূহ যেমন পূর্নাঙ্গ বাড়ি ভাড়া,পূর্নাঙ্গ উৎসব ভাতা,পূর্নাঙ্গ চিকিৎসা ভাতা,শিক্ষা ভাতা,পাহাড়িয়া ভাতা,চাকরি বদলিকরণ,দ্রুত ইএফটি চালুকরন,পেনশন বাস্তবায়িত করার জন্য শিক্ষামন্ত্রণালয়কে দ্রুত নির্দেশ দিন।জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বেঁচে থাকলে শিক্ষকদের এরকম আর্থিক দূর্দশা পড়তে হতোনা।আপনি জাতির জনকের সুযোগ্য কণ্যা।আপনার সুযোগ্য নেত্রীত্বে বাংলাদেশ এখন দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মধ্যে চরম শিখরে অবস্থান করতেছে।২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ ইনশাআল্লাহ মধ্যম আয়ের দেশে পৌছবে।
আপনি বিশ্ব ব্যাংকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে স্বপ্নের পদ্মা সেতু নির্মাণ করেছেন,মেট্রোরেল নির্মাণ করেছেন,বঙ্গবন্ধু ট্যানেল,বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট মহাকাশে পাঠিয়েছেন। আপনার বিবেকের নিকট প্রশ্ন এমপিওভূক্ত শিক্ষক, শিক্ষিকারা এ কমবেতনে অভুক্ত থেকে শিক্ষাদান করছে।যদি ত্দের এই যৌক্তিক দাবি সমূহ না মানেন তাহলে স্মার্ট বাংলাদেশ এর স্বপ্ন অধরা থেকে যাবে। বাংলাদেশ ছাড়া পৃথিবীর আর কোনো দেশ নেই শিক্ষকদেরকে এই রকম আর্থিক দূর্দশার মধ্যে জীবন যাপন করতে হয়।কারন দ্রব্য মূল্যের এই সময়ে সামান্য বেতন দিয়ে শিক্ষকরা তাদের সন্তান সন্ততি বাবা মার সকল চাহিদা কিভাবে পূরন করবে?

ট্যাগ:

আপনার মন্তব্য লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষণ করুন

লেখক তথ্য সম্পর্কে

৫ লাখের অধিক এমপিও ভূক্ত শিক্ষক -কর্মচারী চরম বৈষম্যের শিকার!

আপডেটের সময় : ০২:৩৯:২০ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৭ মার্চ ২০২৪

আজিজুর রহমান আযম,সিনিয়র সাংবাদিক ও কলামিস্ট:
বাংলাদেশের প্রায় পাঁচ লাখের উপর অধিক এমপিও ভূক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা স্বাধীনতার পর থেকে এই পর্যন্ত রাষ্ট্রের চরম বৈষম্যের শিকার।
তাদের দ্বারা দেশের শিক্ষাব্যবস্থার প্রায় ৯৮% শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিচালিত হয়ে আসছে। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখ ও পরিতাপের বিষয় তাদেরকে অধ্যক্ষ/প্রধান শিক্ষক/সুপার থেকে পিয়ন পর্যন্ত মাত্র ১ হাজার টাকা বাড়ি ভাড়া দেওয়া হয়।এই সামান্য টাকা দিয়ে বাড়ি ভাড়া তো দূরের কথা বাড়ির বারান্দা ভাড়াও পাওয়া সম্ভব নয়।তারা উৎসব ভাতা পান মূল বেতনের মাত্র ২৫% টাকা।তাও এটা চার দলীয় জোট বিএনপি সরকারের সময় এটা দেওয়া হয়েছে।অত্যন্ত দুঃখের বিষয় আওয়ামী লীগ এর মতো প্রাচীন একটি দল দীর্ঘদিন ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত,কিন্তু তারা শিক্ষকদের উৎসব ভাতা একটি পয়সাও বাড়ায়নি।এটা শিক্ষকদের জন্য বিরাট ট্র্যজেডি!এর উপর মরার উপর খাড়ার ঘা এর মতো আরেকটি মর্মান্তিক ঘটনা, অদূরদর্শী এক কারিগরি কলেজের অধ্যক্ষ শাহজান আলম সাজুর প্ররোচনায় ২০১৭ সাল থেকে শিক্ষকদের বেতন থেকে অতিরিক্ত ৪% কর্তন শুরু করেছে,কিন্তু একজন শিক্ষক শিক্ষিকা তার চাকরির অবসরের পর এই ৪% এর কোনো ন্যায্য
হিস্যা পায়না উল্লেখ্য চারদলীয় জোট সরকারের সময় সেলিম ভূইয়া ও বর্তমান সরকারের সময় শাহজাহান আলম সাজুর নিকট শিক্ষকরা জিম্মি।অসহায় শিক্ষকদের টাকা নয়ছয় করার জন্য তাদের উপর আল্লাহর গজব পড়ুক।
কিন্তু আশার ব্যাপার শিক্ষকরা দীর্ঘদিন মামলা মৌকদ্দমা করে শেষ পর্যন্ত মহামান্য হাইকোর্ট এর রায়ে তাদের অতিরিক্ত ৪% কর্তন সহ মোট ১০% কর্তনের ন্যায্য হিস্যা চাকরির অবসরের ৬মাসের মধ্যে প্রদান করার জন্য শিক্ষা মন্ত্রনালয়কে নির্দেশ দেন।আশা করি বর্তমান সরকার শিক্ষকদের ন্যায্য ও ন্যায় সঙ্গত দাবীর প্রতি সম্মান রেখে আপিল করবেন না।যদি এই রায়ের বিরুদ্ধে সরকার আপিল করে তাহলে শিক্ষকরা মানসিক ভাবে ভেঙে পড়বে এবং এর বিরুদ্ধ তীব্র আন্দোলন গড়ে তুলবে।

শিক্ষকরা মানুষ গড়ার কারিগর। তারা জাতির নির্মাতা।স্মার্ট বাংলাদেশ গঠন করতে হলে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা,মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী, মাননীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী,শিক্ষা সচিব ও মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অদিদপ্তরের ডিজি মহোদয়কে একজন অভিভাবক ও কলাম লেখক হিসেবে অনুরোধ জানাই শিক্ষকদের যৌক্তিক দাবি সমূহ যেমন পূর্নাঙ্গ বাড়ি ভাড়া,পূর্নাঙ্গ উৎসব ভাতা,পূর্নাঙ্গ চিকিৎসা ভাতা,শিক্ষা ভাতা,পাহাড়িয়া ভাতা,চাকরি বদলিকরণ,দ্রুত ইএফটি চালুকরন,পেনশন বাস্তবায়িত করার জন্য শিক্ষামন্ত্রণালয়কে দ্রুত নির্দেশ দিন।জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বেঁচে থাকলে শিক্ষকদের এরকম আর্থিক দূর্দশা পড়তে হতোনা।আপনি জাতির জনকের সুযোগ্য কণ্যা।আপনার সুযোগ্য নেত্রীত্বে বাংলাদেশ এখন দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মধ্যে চরম শিখরে অবস্থান করতেছে।২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ ইনশাআল্লাহ মধ্যম আয়ের দেশে পৌছবে।
আপনি বিশ্ব ব্যাংকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে স্বপ্নের পদ্মা সেতু নির্মাণ করেছেন,মেট্রোরেল নির্মাণ করেছেন,বঙ্গবন্ধু ট্যানেল,বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট মহাকাশে পাঠিয়েছেন। আপনার বিবেকের নিকট প্রশ্ন এমপিওভূক্ত শিক্ষক, শিক্ষিকারা এ কমবেতনে অভুক্ত থেকে শিক্ষাদান করছে।যদি ত্দের এই যৌক্তিক দাবি সমূহ না মানেন তাহলে স্মার্ট বাংলাদেশ এর স্বপ্ন অধরা থেকে যাবে। বাংলাদেশ ছাড়া পৃথিবীর আর কোনো দেশ নেই শিক্ষকদেরকে এই রকম আর্থিক দূর্দশার মধ্যে জীবন যাপন করতে হয়।কারন দ্রব্য মূল্যের এই সময়ে সামান্য বেতন দিয়ে শিক্ষকরা তাদের সন্তান সন্ততি বাবা মার সকল চাহিদা কিভাবে পূরন করবে?