১০:৪০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৯ অক্টোবর ২০২৫, ২৪ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

খোঁজ মিললো ডিবি হারুনের

  • রিপোর্টারের নাম
  • আপডেটের সময় : ০৪:১৯:৫৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • ৮১ টাইম ভিউ

ডেস্ক নিউজ : ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে আওয়ামী সরকার পতনের পর থেকে পলাতক রয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের সাবেক অতিরিক্ত কমিশনার ও আলোচিত-সমালোচিত পুলিশ কর্মকর্তা হারুন অর রশীদ।

দীর্ঘদিন পর এবার খোঁজ মিলেছে তার। আমেরিকার টেক্সাসের উডল্যান্ড শহরে তাকে দেখা গেছে।

সূত্রে জানা যায়, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ত্যাগের খবর জানার পর শাহবাগে লোকজনের সংখ্যা বাড়তে থাকে। এর আগে হারুন দিনভর পুলিশ প্রধানের সাথেই ছিলেন।

কিন্তু হাসিনার দেশ ত্যাগের খবর পাওয়ার পর থেকে ওয়্যারলেসে তিনি কোনো নির্দেশনা দেননি। ওই দিন দুপুরে তিনি পুলিশ সদর দফতরের পূর্ব পাশে থাকা সিটি করপোরেশনের সীমানা দেয়াল টপকে পালিয়ে যান।

ওইদিন রাতে তিনি কোথায় ছিলেন সে বিষয়ে নিশ্চিত করে কিছু জানা যায়নি।

তবে পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, তিনি কূটনৈতিক এলাকায় একটি দূতাবাসে আশ্রয় নেন। ২০০৬ সালে ডিভি লটারিতে আমেরিকার ভিসা পান হারুনের স্ত্রী। বৈধ ভিসা থাকায় সেই সূত্রে আমেরিকা পালানোর চেষ্টা করেন তিনি।

যোগাযোগ করেন মার্কিন দূতাবাসেও, নিশ্চয়তা চান তাকে অক্ষত অবস্থায় বিমানবন্দরে বিমানে তুলে দিয়ে আসার। তবে কূটনৈতিক সূত্র জানায়, তার প্রস্তাব নাকচ করে দেয় দূতাবাস। পরে তিনি সেখান থেকে ফিরে আসেন।

এরপর বিকালে কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের সোয়াটের একটি গাড়ি তাকে মিরপুরের দিকে একটি জায়গায় দিয়ে আসে। সেখানে কিছু ব্যক্তির সাথে আলাপ করে– বিমানবন্দর দিয়ে পালানোর চেষ্টা করেন হারুন। গাড়িতে করে পৌঁছেও যান বিমানবন্দরে।

তবে বিমানবন্দরের টার্মিনালে প্রবেশের আগেই জনতা তাকে দেখে চিনে ফেললে, মারধরের শিকার হন। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে সেখান থেকে নিয়ে যাওয়া রাজধানীর একটি বিশেষায়িত হাসপাতালে। এরপর থেকে তার আর কোনো হদিস পাওয়া যায়নি।

অস্ট্রেলিয়ান প্রবাসী জাতীয় নাগরিক পার্টির যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক দিলশানা পারুল তার ফেসবুক পোস্টে ডিবি হারুনের একটি ছবি শেয়ার করে লিখেছেন, ডিবি হারুনকে টেক্সাসের উডল্যান্ডে দেখা গেছে। আমেরিকায় প্রবাসীরা সজাগ থাকুন। দেখার সঙ্গে সঙ্গে দেশে ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা করুন।

সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক দিলশানা পারুল তার ফেসবুক পোস্টে ডিবি হারুনের একটি ছবি শেয়ার করে দাবি করেছেন, তাকে টেক্সাসের উডল্যান্ড শহরে দেখা গেছে।

আমেরিকান প্রবাসীদের উদ্দেশে তিনি লেখেন, আমেরিকায় প্রবাসীরা সজাগ থাকুন, দেখার সঙ্গে সঙ্গে দেশে ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা করুন।

মুহূর্তেই তার এই পোস্টটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এই নিয়ে দেশজুড়ে শুরু হয়েছে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা।

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদী সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা ডিবি হারুনের ওই ছবি নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে শেয়ার করে প্রশ্ন তুলেছেন, ঢাকায় ধরা পড়া ডিবি হারুনকে আমেরিকায় পাঠিয়েছে কারা!

এনসিপির যুগ্ম সদস্য সচিব এস এম সাইফ মোস্তাফিজও ডিবি হারুনের ওই ছবি শেয়ার করে ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছেন।

পোস্টে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুলকে ম্যানশন করে তিনি লেখেন, আপনারা উপদেষ্টা হয়েও ডিবি হারুনরা দেশে ধরা পড়ার পরও কীভাবে দেশ থেকে নিরাপদে বের হয়ে টেক্সাস চলে যায়? আপনাদের উপদেষ্টামণ্ডলীর কাজ কী?

তিনি আরও লেখেন, আওয়ামী লীগের ব্যাপারে কী করলেন আপনারা? এক মহাধুমধামে নির্বাচন করে ক্ষমতা হস্তান্তর আর আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীদের নিরাপত্তা দেওয়া, তাদের সম্পদ পাহারা দেওয়া ছাড়া আর কোন কাজটা আপনারা হতে দিচ্ছেন?

ট্যাগ:

আপনার মন্তব্য লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষণ করুন

লেখক তথ্য সম্পর্কে

খোঁজ মিললো ডিবি হারুনের

আপডেটের সময় : ০৪:১৯:৫৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫

ডেস্ক নিউজ : ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে আওয়ামী সরকার পতনের পর থেকে পলাতক রয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের সাবেক অতিরিক্ত কমিশনার ও আলোচিত-সমালোচিত পুলিশ কর্মকর্তা হারুন অর রশীদ।

দীর্ঘদিন পর এবার খোঁজ মিলেছে তার। আমেরিকার টেক্সাসের উডল্যান্ড শহরে তাকে দেখা গেছে।

সূত্রে জানা যায়, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ত্যাগের খবর জানার পর শাহবাগে লোকজনের সংখ্যা বাড়তে থাকে। এর আগে হারুন দিনভর পুলিশ প্রধানের সাথেই ছিলেন।

কিন্তু হাসিনার দেশ ত্যাগের খবর পাওয়ার পর থেকে ওয়্যারলেসে তিনি কোনো নির্দেশনা দেননি। ওই দিন দুপুরে তিনি পুলিশ সদর দফতরের পূর্ব পাশে থাকা সিটি করপোরেশনের সীমানা দেয়াল টপকে পালিয়ে যান।

ওইদিন রাতে তিনি কোথায় ছিলেন সে বিষয়ে নিশ্চিত করে কিছু জানা যায়নি।

তবে পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, তিনি কূটনৈতিক এলাকায় একটি দূতাবাসে আশ্রয় নেন। ২০০৬ সালে ডিভি লটারিতে আমেরিকার ভিসা পান হারুনের স্ত্রী। বৈধ ভিসা থাকায় সেই সূত্রে আমেরিকা পালানোর চেষ্টা করেন তিনি।

যোগাযোগ করেন মার্কিন দূতাবাসেও, নিশ্চয়তা চান তাকে অক্ষত অবস্থায় বিমানবন্দরে বিমানে তুলে দিয়ে আসার। তবে কূটনৈতিক সূত্র জানায়, তার প্রস্তাব নাকচ করে দেয় দূতাবাস। পরে তিনি সেখান থেকে ফিরে আসেন।

এরপর বিকালে কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের সোয়াটের একটি গাড়ি তাকে মিরপুরের দিকে একটি জায়গায় দিয়ে আসে। সেখানে কিছু ব্যক্তির সাথে আলাপ করে– বিমানবন্দর দিয়ে পালানোর চেষ্টা করেন হারুন। গাড়িতে করে পৌঁছেও যান বিমানবন্দরে।

তবে বিমানবন্দরের টার্মিনালে প্রবেশের আগেই জনতা তাকে দেখে চিনে ফেললে, মারধরের শিকার হন। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে সেখান থেকে নিয়ে যাওয়া রাজধানীর একটি বিশেষায়িত হাসপাতালে। এরপর থেকে তার আর কোনো হদিস পাওয়া যায়নি।

অস্ট্রেলিয়ান প্রবাসী জাতীয় নাগরিক পার্টির যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক দিলশানা পারুল তার ফেসবুক পোস্টে ডিবি হারুনের একটি ছবি শেয়ার করে লিখেছেন, ডিবি হারুনকে টেক্সাসের উডল্যান্ডে দেখা গেছে। আমেরিকায় প্রবাসীরা সজাগ থাকুন। দেখার সঙ্গে সঙ্গে দেশে ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা করুন।

সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক দিলশানা পারুল তার ফেসবুক পোস্টে ডিবি হারুনের একটি ছবি শেয়ার করে দাবি করেছেন, তাকে টেক্সাসের উডল্যান্ড শহরে দেখা গেছে।

আমেরিকান প্রবাসীদের উদ্দেশে তিনি লেখেন, আমেরিকায় প্রবাসীরা সজাগ থাকুন, দেখার সঙ্গে সঙ্গে দেশে ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা করুন।

মুহূর্তেই তার এই পোস্টটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এই নিয়ে দেশজুড়ে শুরু হয়েছে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা।

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদী সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা ডিবি হারুনের ওই ছবি নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে শেয়ার করে প্রশ্ন তুলেছেন, ঢাকায় ধরা পড়া ডিবি হারুনকে আমেরিকায় পাঠিয়েছে কারা!

এনসিপির যুগ্ম সদস্য সচিব এস এম সাইফ মোস্তাফিজও ডিবি হারুনের ওই ছবি শেয়ার করে ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছেন।

পোস্টে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুলকে ম্যানশন করে তিনি লেখেন, আপনারা উপদেষ্টা হয়েও ডিবি হারুনরা দেশে ধরা পড়ার পরও কীভাবে দেশ থেকে নিরাপদে বের হয়ে টেক্সাস চলে যায়? আপনাদের উপদেষ্টামণ্ডলীর কাজ কী?

তিনি আরও লেখেন, আওয়ামী লীগের ব্যাপারে কী করলেন আপনারা? এক মহাধুমধামে নির্বাচন করে ক্ষমতা হস্তান্তর আর আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীদের নিরাপত্তা দেওয়া, তাদের সম্পদ পাহারা দেওয়া ছাড়া আর কোন কাজটা আপনারা হতে দিচ্ছেন?