০৪:৪৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৯ অক্টোবর ২০২৫, ২৪ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

পিআর পিআর চিৎকার করে কিছু পাওয়ার আসায়–সালাহউদ্দিন

কক্সবাজার :গণতন্ত্রের ভাষা হচ্ছে- মানুষ যাকে পছন্দ করবে তাকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী সালাহউদ্দিন আহমদ। তিনি আরও বলেন পিআরের ভাষা হচ্ছে- মার্কার মধ্যে ভোট দেবে, কে এমপি হবে কেউ জানে না।

২৩ আগস্ট শনিবার কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলা বিএনপির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন ও কাউন্সিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, পিআরে গণতন্ত্র নেই। কেউ কেউ এখনো পিআর-পিআর বলে চিৎকার করছে, উদ্দেশ্য কিন্তু পিআর না, উদ্দেশ্য হচ্ছে পিআর পিআর করে যদি কিছু পায়। যারা চিৎকার করছেন আপনারা আসুন, আলোচনা করি, কীভাবে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা যায়।

সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, এদেশের মানুষ ১৬ বছর ধরে রক্ত দিয়েছে ভোটের অধিকারের জন্য, গণতান্ত্রিক অধিকার আদায়ের জন্য, সাংবিধানিক অধিকার আদায়ের জন্য। সে সমস্ত অধিকার প্রতিষ্ঠা হবে ভোটাধিকার প্রয়োগের মধ্য দিয়ে।

তিনি বলেন, শেখ হাসিনার আমলে রাজনীতি ছিল কারাগারে, রাজনীতি নির্বাসিত ছিল লন্ডনে, রাজনীতি নির্বাসিত ছিল শিলংয়ে। বাংলাদেশকে করদ রাজ্য করার জন্য শেখ হাসিনা সবকিছু করেছেন। সাংবিধানিক প্রক্রিয়ায় গণতন্ত্রকে কবর দিয়েছেন। নিশিরাতের নির্বাচনের মধ্য দিয়ে নির্বাচনকে নির্বাসিত করেছেন। গণতন্ত্রকে কারাগারে আটকে রেখেছিল ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা।

তিনি আরও বলেন, নির্বাচনের মৌসুম শুরু হয়ে গিয়েছে। নির্বাচনের সময়সীমা ঘোষণা হয়ে গেছে। নির্বাচনের তফসিল ডিসেম্বরের শুরুতে ঘোষণা হবে, ইনশাআল্লাহ। আপনারা এখন প্রতি ঘরে ঘরে যাবেন, ধানের শীষের পক্ষে ভোট চাইবেন।

সালাহউদ্দিন বলেন, শেখ হাসিনা নিজেই প্রমাণ করেছেন তিনি এই দেশের লোক না। আওয়ামী লীগ নিজেরাই প্রমাণ করেছে তারা এদেশের কোনো রাজনৈতিক দল ছিল না। তারা অন্য একটি দেশের অন্য একটি দলের অঙ্গ সংগঠন ছিল বাংলাদেশে।

তার ভাষায়, শেখ হাসিনা মরিয়া প্রমাণ করলেন তিনি ভারতের লোক। আওয়ামী লীগ পতনের মধ্য দিয়ে নিজেদের বিনাশের মধ্য দিয়ে প্রমাণ করেছে তারা এই দেশের রাজনৈতিক কোনো শক্তি ছিল না।

তিনি মনে করেন, আওয়ামী লীগ ছিল একটা মাফিয়া শক্তি, আওয়ামী লীগ ছিল একটা সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠী, আওয়ামী লীগ ছিল একটি ফ্যাসিস্ট গোষ্ঠী।

আওয়ামী লীগের ডিএনএতেই গণতন্ত্র নেই বলেও মন্তব্য করেন বিএনপির এই শীর্ষ নেতা।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে কথা বললেই বলতো, দেশদ্রোহী। কেউ বিরুদ্ধে বক্তব্য দিলেই বলতো একে সাইবার সিকিউরিটি আইনে গ্রেপ্তার করো। তারা কথা বলার অধিকার বন্ধ করেছে, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা বন্ধ করেছে।

সালাহউদ্দিন মনে করেন, আর যেন শেখ হাসিনার মতো কোনো ফ্যাসিস্টের উত্থান না হয়, তার জন্য গণতান্ত্রিক চর্চা অব্যাহত রাখতে হবে।

চকরিয়া সরকারি কলেজ মাঠে আয়োজিত এই সম্মেলন উদ্বোধন করেন জেলা বিএনপির সভাপতি শাহজাহান চৌধুরী। এতে সভাপতিত্ব করেন সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক এনামুল হক এবং সঞ্চালনা করেন কমিটির সদস্য সচিব এম মোবারক আলী। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মীর হেলাল উদ্দিন, সাবেক সংসদ সদস্য হাসিনা আহমেদ এবং জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শামীম আরা স্বপ্না। এছাড়াও, বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা বক্তব্য রাখেন।

এছাড়া বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি আবু সুফিয়ান, জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি মিজানুর রহমান চৌধুরী খোকন মিয়া, সাংগঠনিক সম্পাদক জামিল ইব্রাহিম চৌধুরী প্রমুখ।

এর আগে দলে দলে গাড়ির বহর নিয়ে হাজার হাজার নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ সম্মেলনস্থলে আসেন। দীর্ঘ ৫ বছর পর জাঁকজমকভাবে আয়োজিত সম্মেলন ঘিরে বিএনপির সাধারণ নেতাকর্মীর মাঝে অন্য রকম এক উদ্দীপনা দেখা দিয়েছে। অন্তত ৫০ হাজার নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ এই সম্মেলনে যোগ দেন। গান বাজিয়ে, ঢোল বাদ্য বাজানোর তালে নাচতে নাচতে তারা সম্মেলনের অংশ হয়ে নিজেদের উপস্থিতি জানান দেন।

ট্যাগ:

আপনার মন্তব্য লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষণ করুন

লেখক তথ্য সম্পর্কে

পিআর পিআর চিৎকার করে কিছু পাওয়ার আসায়–সালাহউদ্দিন

আপডেটের সময় : ০২:৪২:৪৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৩ অগাস্ট ২০২৫

কক্সবাজার :গণতন্ত্রের ভাষা হচ্ছে- মানুষ যাকে পছন্দ করবে তাকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী সালাহউদ্দিন আহমদ। তিনি আরও বলেন পিআরের ভাষা হচ্ছে- মার্কার মধ্যে ভোট দেবে, কে এমপি হবে কেউ জানে না।

২৩ আগস্ট শনিবার কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলা বিএনপির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন ও কাউন্সিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, পিআরে গণতন্ত্র নেই। কেউ কেউ এখনো পিআর-পিআর বলে চিৎকার করছে, উদ্দেশ্য কিন্তু পিআর না, উদ্দেশ্য হচ্ছে পিআর পিআর করে যদি কিছু পায়। যারা চিৎকার করছেন আপনারা আসুন, আলোচনা করি, কীভাবে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা যায়।

সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, এদেশের মানুষ ১৬ বছর ধরে রক্ত দিয়েছে ভোটের অধিকারের জন্য, গণতান্ত্রিক অধিকার আদায়ের জন্য, সাংবিধানিক অধিকার আদায়ের জন্য। সে সমস্ত অধিকার প্রতিষ্ঠা হবে ভোটাধিকার প্রয়োগের মধ্য দিয়ে।

তিনি বলেন, শেখ হাসিনার আমলে রাজনীতি ছিল কারাগারে, রাজনীতি নির্বাসিত ছিল লন্ডনে, রাজনীতি নির্বাসিত ছিল শিলংয়ে। বাংলাদেশকে করদ রাজ্য করার জন্য শেখ হাসিনা সবকিছু করেছেন। সাংবিধানিক প্রক্রিয়ায় গণতন্ত্রকে কবর দিয়েছেন। নিশিরাতের নির্বাচনের মধ্য দিয়ে নির্বাচনকে নির্বাসিত করেছেন। গণতন্ত্রকে কারাগারে আটকে রেখেছিল ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা।

তিনি আরও বলেন, নির্বাচনের মৌসুম শুরু হয়ে গিয়েছে। নির্বাচনের সময়সীমা ঘোষণা হয়ে গেছে। নির্বাচনের তফসিল ডিসেম্বরের শুরুতে ঘোষণা হবে, ইনশাআল্লাহ। আপনারা এখন প্রতি ঘরে ঘরে যাবেন, ধানের শীষের পক্ষে ভোট চাইবেন।

সালাহউদ্দিন বলেন, শেখ হাসিনা নিজেই প্রমাণ করেছেন তিনি এই দেশের লোক না। আওয়ামী লীগ নিজেরাই প্রমাণ করেছে তারা এদেশের কোনো রাজনৈতিক দল ছিল না। তারা অন্য একটি দেশের অন্য একটি দলের অঙ্গ সংগঠন ছিল বাংলাদেশে।

তার ভাষায়, শেখ হাসিনা মরিয়া প্রমাণ করলেন তিনি ভারতের লোক। আওয়ামী লীগ পতনের মধ্য দিয়ে নিজেদের বিনাশের মধ্য দিয়ে প্রমাণ করেছে তারা এই দেশের রাজনৈতিক কোনো শক্তি ছিল না।

তিনি মনে করেন, আওয়ামী লীগ ছিল একটা মাফিয়া শক্তি, আওয়ামী লীগ ছিল একটা সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠী, আওয়ামী লীগ ছিল একটি ফ্যাসিস্ট গোষ্ঠী।

আওয়ামী লীগের ডিএনএতেই গণতন্ত্র নেই বলেও মন্তব্য করেন বিএনপির এই শীর্ষ নেতা।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে কথা বললেই বলতো, দেশদ্রোহী। কেউ বিরুদ্ধে বক্তব্য দিলেই বলতো একে সাইবার সিকিউরিটি আইনে গ্রেপ্তার করো। তারা কথা বলার অধিকার বন্ধ করেছে, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা বন্ধ করেছে।

সালাহউদ্দিন মনে করেন, আর যেন শেখ হাসিনার মতো কোনো ফ্যাসিস্টের উত্থান না হয়, তার জন্য গণতান্ত্রিক চর্চা অব্যাহত রাখতে হবে।

চকরিয়া সরকারি কলেজ মাঠে আয়োজিত এই সম্মেলন উদ্বোধন করেন জেলা বিএনপির সভাপতি শাহজাহান চৌধুরী। এতে সভাপতিত্ব করেন সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক এনামুল হক এবং সঞ্চালনা করেন কমিটির সদস্য সচিব এম মোবারক আলী। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মীর হেলাল উদ্দিন, সাবেক সংসদ সদস্য হাসিনা আহমেদ এবং জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শামীম আরা স্বপ্না। এছাড়াও, বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা বক্তব্য রাখেন।

এছাড়া বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি আবু সুফিয়ান, জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি মিজানুর রহমান চৌধুরী খোকন মিয়া, সাংগঠনিক সম্পাদক জামিল ইব্রাহিম চৌধুরী প্রমুখ।

এর আগে দলে দলে গাড়ির বহর নিয়ে হাজার হাজার নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ সম্মেলনস্থলে আসেন। দীর্ঘ ৫ বছর পর জাঁকজমকভাবে আয়োজিত সম্মেলন ঘিরে বিএনপির সাধারণ নেতাকর্মীর মাঝে অন্য রকম এক উদ্দীপনা দেখা দিয়েছে। অন্তত ৫০ হাজার নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ এই সম্মেলনে যোগ দেন। গান বাজিয়ে, ঢোল বাদ্য বাজানোর তালে নাচতে নাচতে তারা সম্মেলনের অংশ হয়ে নিজেদের উপস্থিতি জানান দেন।