০১:১৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১০ অক্টোবর ২০২৫, ২৪ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

লক্ষ্মীপুরের তুষারের বিস্ময়কর জয়

  • রিপোর্টারের নাম
  • আপডেটের সময় : ০৮:৩৪:০৯ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১২ অগাস্ট ২০২৫
  • ১৩১ টাইম ভিউ

কবির আহমদ ফারুক( চন্দ্রগঞ্জ-লক্ষ্মীপুর) : ইসলামী ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজিতে অনুষ্ঠিত রোবট ও প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতায় সারা দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিযোগীদের পেছনে ফেলে প্রথম স্থান অর্জন করেছে চন্দ্রগঞ্জের কৃতি সন্তান প্রতাপগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের কৃতি শিক্ষার্থী তানভীর মাহমুদ তুষার।

তুষারের তৈরি রোবট শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীদের পাঠদান করবে, আর তার উদ্ভাবিত সফটওয়্যার গ্রামের শিক্ষার্থীদের সহজ উপায়ে প্রোগ্রামিং শেখাবে।

লক্ষ্মীপুর সদরের চন্দ্রগঞ্জ পশ্চিম বাজারের দেওপাড়া গ্রামের কড়িমুদ্দিন মোল্লা বাড়ির ইতালী প্রবাসী আবদুল আলিম মাহমুদ টিটন তাঁর একমাত্র ছেলের এই সাফল্যে গর্বিত হয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলহামদুলিল্লাহ লিখে দোয়া প্রার্থনা করেছেন।

লক্ষ্মীপুরের এক প্রান্তিক গ্রাম থেকে শুরু করে দেশের সেরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর প্রতিযোগিতার মঞ্চ— পথটা সহজ ছিল না। কিন্তু সেই পথ জয় করেছে চন্দ্রগঞ্জের কৃতি সন্তান তানভীর মাহমুদ তুষার।

ইসলামী ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজিতে অনুষ্ঠিত রোবট ও প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতায় দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিযোগীদের হারিয়ে প্রথম হয়েছে সে। তার নিজের বানানো রোবট শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীদের পাঠদান করবে, আর উদ্ভাবিত সফটওয়্যার গ্রামের ছেলে-মেয়েদের সহজ উপায়ে প্রোগ্রামিং শেখাবে— যেন শহর-গ্রামের প্রযুক্তি ব্যবধান কমে আসে।

তুষারের বাবা, ইতালী প্রবাসী আবদুল আলিম মাহমুদ টিটন, ছেলের এই সাফল্যের খবর পেয়ে ভিডিও কলের ওপারে চোখ ভিজিয়ে বলেন, “আমার ছেলেকে নিয়ে দোয়া করবেন— সে যেন দেশের জন্য কিছু করতে পারে।”
পরে তিনি নিজের ফেসবুক পোস্টে লিখেন— “আলহামদুলিল্লাহ।”

দেওপাড়া গ্রামের মানুষ এখন তুষারকে শুধু একজন মেধাবী তরুণ নয়, বরং গ্রামের স্বপ্নবাহক হিসেবে দ

ঢাকার অদূরে তেজগাঁওয়ের ইসলামী ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির অডিটোরিয়ামে সেদিন ছিল ভিন্ন রকম ব্যস্ততা। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা নামী-দামি বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী শিক্ষার্থীরা রোবট ও প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতায় অংশ নিচ্ছে। হলঘরে পিনপতন নীরবতা— সবাই তাকিয়ে আছে মঞ্চের দিকে। সেই মঞ্চেই দাঁড়িয়ে চন্দ্রগঞ্জের দেওপাড়া গ্রামের ছেলে তানভীর মাহমুদ তুষার।

শেষ ধাপের প্রদর্শনীতে তুষারের তৈরি রোবট শিক্ষকের মতো বোর্ডে লিখে লিখে পাঠ দিচ্ছে, আর পাশের বড় পর্দায় চলছে তার উদ্ভাবিত সফটওয়্যার— যা গ্রামের ছেলে-মেয়েদের সহজভাবে প্রোগ্রামিং শেখাবে। বিচারকদের চোখে বিস্ময়, দর্শকদের মুখে মুগ্ধতা। ঘোষণায় যখন শোনা গেল— “প্রথম স্থান অর্জন করেছে তানভীর মাহমুদ তুষার”— তখন করতালির শব্দে যেন গোটা হল কেঁপে উঠল।

দূর দেশে ইতালীতে থাকা বাবা আবদুল আলিম মাহমুদ টিটন লাইভ ভিডিও কলে এই খবর শুনে মুহূর্তেই চোখ মুছে ফেললেন। কণ্ঠ কাঁপা স্বরে বললেন— “আমার ছেলেটার জন্য দোয়া করবেন, সে যেন দেশের জন্য কিছু করতে পারে।” কিছুক্ষণ পরই তিনি নিজের ফেসবুক পোস্টে লিখলেন— “আলহামদুলিল্লাহ।”

তুষারের এই সাফল্যে আনন্দে ভাসছে লক্ষ্মীপুর সদরের চন্দ্রগঞ্জ পশ্চিম বাজারের দেওপাড়া গ্রাম। গ্রামের চায়ের দোকানে এখন আলোচনার কেন্দ্র তুষার— “আমাদের গ্রামের ছেলে, দেশের সেরা হয়েছে”— গর্ব ভরা এই কথাই প্রতিটি মুখে।

তুষারের স্বপ্ন একটাই— প্রযুক্তি যেন শহরের গণ্ডি পেরিয়ে গ্রামের প্রতিটি স্কুলে পৌঁছে যায়, যেন কোনো মেধা অভাবে হারিয়ে না যায়।

ট্যাগ:

আপনার মন্তব্য লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষণ করুন

লেখক তথ্য সম্পর্কে

লক্ষ্মীপুরের তুষারের বিস্ময়কর জয়

আপডেটের সময় : ০৮:৩৪:০৯ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১২ অগাস্ট ২০২৫

কবির আহমদ ফারুক( চন্দ্রগঞ্জ-লক্ষ্মীপুর) : ইসলামী ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজিতে অনুষ্ঠিত রোবট ও প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতায় সারা দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিযোগীদের পেছনে ফেলে প্রথম স্থান অর্জন করেছে চন্দ্রগঞ্জের কৃতি সন্তান প্রতাপগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের কৃতি শিক্ষার্থী তানভীর মাহমুদ তুষার।

তুষারের তৈরি রোবট শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীদের পাঠদান করবে, আর তার উদ্ভাবিত সফটওয়্যার গ্রামের শিক্ষার্থীদের সহজ উপায়ে প্রোগ্রামিং শেখাবে।

লক্ষ্মীপুর সদরের চন্দ্রগঞ্জ পশ্চিম বাজারের দেওপাড়া গ্রামের কড়িমুদ্দিন মোল্লা বাড়ির ইতালী প্রবাসী আবদুল আলিম মাহমুদ টিটন তাঁর একমাত্র ছেলের এই সাফল্যে গর্বিত হয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলহামদুলিল্লাহ লিখে দোয়া প্রার্থনা করেছেন।

লক্ষ্মীপুরের এক প্রান্তিক গ্রাম থেকে শুরু করে দেশের সেরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর প্রতিযোগিতার মঞ্চ— পথটা সহজ ছিল না। কিন্তু সেই পথ জয় করেছে চন্দ্রগঞ্জের কৃতি সন্তান তানভীর মাহমুদ তুষার।

ইসলামী ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজিতে অনুষ্ঠিত রোবট ও প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতায় দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিযোগীদের হারিয়ে প্রথম হয়েছে সে। তার নিজের বানানো রোবট শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীদের পাঠদান করবে, আর উদ্ভাবিত সফটওয়্যার গ্রামের ছেলে-মেয়েদের সহজ উপায়ে প্রোগ্রামিং শেখাবে— যেন শহর-গ্রামের প্রযুক্তি ব্যবধান কমে আসে।

তুষারের বাবা, ইতালী প্রবাসী আবদুল আলিম মাহমুদ টিটন, ছেলের এই সাফল্যের খবর পেয়ে ভিডিও কলের ওপারে চোখ ভিজিয়ে বলেন, “আমার ছেলেকে নিয়ে দোয়া করবেন— সে যেন দেশের জন্য কিছু করতে পারে।”
পরে তিনি নিজের ফেসবুক পোস্টে লিখেন— “আলহামদুলিল্লাহ।”

দেওপাড়া গ্রামের মানুষ এখন তুষারকে শুধু একজন মেধাবী তরুণ নয়, বরং গ্রামের স্বপ্নবাহক হিসেবে দ

ঢাকার অদূরে তেজগাঁওয়ের ইসলামী ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির অডিটোরিয়ামে সেদিন ছিল ভিন্ন রকম ব্যস্ততা। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা নামী-দামি বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী শিক্ষার্থীরা রোবট ও প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতায় অংশ নিচ্ছে। হলঘরে পিনপতন নীরবতা— সবাই তাকিয়ে আছে মঞ্চের দিকে। সেই মঞ্চেই দাঁড়িয়ে চন্দ্রগঞ্জের দেওপাড়া গ্রামের ছেলে তানভীর মাহমুদ তুষার।

শেষ ধাপের প্রদর্শনীতে তুষারের তৈরি রোবট শিক্ষকের মতো বোর্ডে লিখে লিখে পাঠ দিচ্ছে, আর পাশের বড় পর্দায় চলছে তার উদ্ভাবিত সফটওয়্যার— যা গ্রামের ছেলে-মেয়েদের সহজভাবে প্রোগ্রামিং শেখাবে। বিচারকদের চোখে বিস্ময়, দর্শকদের মুখে মুগ্ধতা। ঘোষণায় যখন শোনা গেল— “প্রথম স্থান অর্জন করেছে তানভীর মাহমুদ তুষার”— তখন করতালির শব্দে যেন গোটা হল কেঁপে উঠল।

দূর দেশে ইতালীতে থাকা বাবা আবদুল আলিম মাহমুদ টিটন লাইভ ভিডিও কলে এই খবর শুনে মুহূর্তেই চোখ মুছে ফেললেন। কণ্ঠ কাঁপা স্বরে বললেন— “আমার ছেলেটার জন্য দোয়া করবেন, সে যেন দেশের জন্য কিছু করতে পারে।” কিছুক্ষণ পরই তিনি নিজের ফেসবুক পোস্টে লিখলেন— “আলহামদুলিল্লাহ।”

তুষারের এই সাফল্যে আনন্দে ভাসছে লক্ষ্মীপুর সদরের চন্দ্রগঞ্জ পশ্চিম বাজারের দেওপাড়া গ্রাম। গ্রামের চায়ের দোকানে এখন আলোচনার কেন্দ্র তুষার— “আমাদের গ্রামের ছেলে, দেশের সেরা হয়েছে”— গর্ব ভরা এই কথাই প্রতিটি মুখে।

তুষারের স্বপ্ন একটাই— প্রযুক্তি যেন শহরের গণ্ডি পেরিয়ে গ্রামের প্রতিটি স্কুলে পৌঁছে যায়, যেন কোনো মেধা অভাবে হারিয়ে না যায়।